অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রীর বাড়িতে শিবগঞ্জের নকশীকাঁথা

0

মোঃ জসিম আকরাম দিপু এবং সোহায়বী রুমি সোনিয়া দম্পতি। অনলাইনে নকশীকাঁথা, বেবি নকশীকাঁথা, দড়ির খাট, মাইচ্চা, দড়ির টুল ইত্যাদি পণ্য নিয়ে কাজ করছেন তারা। সারা দেশে তো বটেই দেশের বাইরেও আমেরিকা, সিঙ্গাপুর এবং অস্ট্রেলিয়াতেও বেশ কয়েকবার এই দম্পতির প্রতিষ্ঠান “নকশী অনলাইন” এর পণ্য পৌঁছে গেছে।

সহধর্মিণী সোহায়বী রুমি সোনিয়াই প্রথম নকশীকাঁথা নিয়ে কাজ শুরুর ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন স্বামী জসিম আকরামের কাছে।মাঝে অনেকগুলো বছর কেটে যায়। পরে ২০২০ সালে উদ্যোক্তা সোহায়বী রুমি সোনিয়া নকশীকাঁথা নিয়ে কাজ শুরু করেন। সেসময় এ দম্পতির মূলধন বলতে ছিল নিজেদের পাঁচ হাজার টাকা এবং দোকান হতে বিশ হাজার টাকার পণ্য বাকিতে নেওয়া। যদিও তাদের উদ্যোগ থেকে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে বাকি টাকাগুলো পরিশোধ করে দিয়েছিলেন তারা।

মনের মাধুরী মিশিয়ে লাল, নীল, হলুদ প্রভৃতি রংবেরঙের সুতায় কাপড়ের ওপর সুঁইয়ের আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয় নানা ধরনের আল্পনা, ফুল,পাখি ও লতাপাতার ছবি। চিত্তাকর্ষক এসব লাবণ্যময় বাহারী চিত্র দেখে চেনা যায় নকশীকাঁথা। আর এই পণ্য নিয়ে কাজ করে এই দম্পতি তো স্বাবলম্বী হয়েছেন পাশাপাশি এলাকার আরো ২০ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে তাদের এই উদ্যোগে কাঁথা স্টিচ, কার্পেট কাঁথা, সুজনী কাঁথা, চেইন কাঁথা, ঘাট সেলাই কাঁথা, চাদর কাঁথা, ভরাট কাঁথা, ডাল সেলাই কাঁথা সহ আরো ভিন্ন ভিন্ন নামের ভিন্ন ডিজাইনের বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যেবাহী নকশীকাঁথা বুনছে উদ্যোক্তা সোহায়বী রুমি এবং তার সহযোদ্ধাগন।

তাদের কাঁথার দৃষ্টিনন্দন নকশা দেখে মুগ্ধ হয়ে গতবছর অস্ট্রেলিয়ার এক প্রবাসী বাংলাদেশী নকশী অনলাইনের কাঁথা অস্ট্রেলিয়ার একজন মন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন।

কাঁথার এতো চাহিদা দেখে স্বামী জসিম আকরাম ভাবলেন আমাদের উদ্যোগের পরিধী আরো একটু বাড়ানো যায়। তিনি সিদ্ধান্ত নেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর আরো কিছু ঐতিহ্যেবাহী পণ্য দড়ির খাট, মাইচ্চা, দড়ির টুল এগুলো যুক্ত করবেন নকশী অনলাইনের পণ্য তালিকায়। ২০২১ সালের মাঝামাঝি এই পণ্য গুলো নিয়ে কাজ শুরু করলেন তিনি। ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের খাট,মাইচ্চা, টুল ইত্যাদি রয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠানে। অভিজ্ঞ কারিগর দিয়ে এই পণ্যগুলো তৈরি করে নিচ্ছেন তারা। সামাজিক পাতাই পেজ থাকার সুবাদে এই পণ্যগুলোও দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে দেশের আদি এই ঐতিহ্যবাহী পণ্যগুলোর সাথে পরিচিত হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম।

দুই-জনের চেষ্টা, কাজের প্রতি ভালোবাসা সেইসাথে সহযোদ্ধাদের সহযোগিতায় পুরো দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এই দম্পতির উদ্যোগ “নকশী অনলাইন।” এই উদ্যোক্তাদ্বয়ের উভয়েরই জন্ম থেকে বেড়ে উঠা চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ এলাকায়। বর্তমানেও তারা শিবগঞ্জ এলাকায় বসবাস করেন।

তামান্না ইমাম, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here